সানাউল্লাহ নূর মূলত গল্পকার। জবাসংহিতা লেখকের প্রথম গল্পগ্রন্থ। দুই দশকের বেশি সময় ধরে লিখলেও স্বল্পপ্রজ তিনি। গল্প বলায় তার রয়েছে নিজস্ব এক ভঙ্গি।
চরিত্রগুলোও এখানে আপাত সহজ-সরল-সাধারণ মানুষ। কিন্তু, বিচিত্র সব জীবনাচরণে তারা অনবদ্য। ধরা যাক ভিক্ষুক হাফেজার কথাই। মৃত্যুর আগে বিশেষত্বহীন হাফেজা মৃত্যুর পর তৈরি করে এক ধাধার জগৎ। সে জগতে দিশাহারা মর্তের মানুষেরা। যেমন, ‘জবাসংহিতা’র জবা মৃত্যুর পরও দুর্দমনীয়। জবার দ্বিতীয় সত্তাকে হত্যার মিথ্যা অজুহাতে জেল খাটে রাহেদ। এখানে এক গল্পে মাছেদের ইতিহাসের আড়ালে লুকিয়ে থাকে মানবসমাজের অস্তিত্বের সংকট। বাস্তব, অবাস্তব ও লোকবিশ্বাসের যোগফলের অনন্যতায় টানটান উত্তেজনাময় ‘হারিছ মামুর অন্তর্ধান’। এভাবেই গল্পের ভেতর মিথ ও দর্শন অপূর্ব মিশ্রণে এক ভিন্নতর জগৎ তৈরি হয়েছে। নূর তাঁর গল্পে বিজ্ঞান, বিশ্বাস, মিথ আর মনস্তত্ত্বকে ব্যবহার করেছেন নিপুণতার সঙ্গে। কিছু কিছু গল্পে ভেঙে দিয়েছেন প্রচলিত সময়-ধারণা। জীবন আর । মৃত্যুকে দাঁড় করিয়েছেন অভিন্ন সরল রেখায়। এভাবে লোকজ বাংলা, আঞ্চলিক ভাষার শক্তি নিরীক্ষা, খিজির সন্ধানের আবরণে একালের বেনিয়াদের ফড়িয়াবাজি, জৈবপ্রযুক্তি ব্যবহারে নির্মম গর্ভ-ভাড়ার মতো বিষয় এবং আরও কিছু গল্পের মুখোমুখি হয়ে পাঠক তার বিস্ময়ভুবনে। নতুনতর মাত্রার সন্ধান পাবেন।
জবাসংহিতা
সানাউল্লাহ নূর