“আমি রুশো বলছি: দি কনফেশান্স্” জ্যাঁ জ্যাক রুশোর বিশ্ববিখ্যাত আত্মজীবনীর প্রথম বাংলা অনুবাদ, অনুবাদক বাংলাদেশের প্রথিতযশা দার্শনিক ও লেখক সরদার ফজলুল করিম। এই গ্রন্থে রুশোর ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ ব্যক্তিজীবন ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংগ্রাম নিখুঁত আন্তরিকতায় তুলে ধরা হয়েছে। রাজনীতি, সমাজনীতি ও সংস্কৃতি নিয়ে রুশোর চিন্তা আজও প্রাসঙ্গিক। তাঁর ব্যক্তিগত সত্য ও আত্মসমালোচনা একদিকে যেমন কাঁটাতার ছুঁয়ে দেয়, অন্যদিকে তেমনি মানসিক পরিশুদ্ধির পথ দেখায়। এই অনুবাদ কেবল সাহিত্যনুরাগীদের জন্য নয়—দর্শন, রাজনীতি ও আত্মবীক্ষণে আগ্রহী পাঠকের জন্যও এক অমূল্য সংযোজন।
জ্যাঁ জ্যাক রুশো সপ্তদশ শতাব্দীর একজন অন্যতম শ্রেষ্ঠ মানুষ ছিলেন। রাজনীতি, সমাজনীতি ও সংস্কৃতি সম্পর্কে তাঁর একটি নিস্ব মূল্যবোধ ছিল। মেধা ও মননের চর্চার মাধ্যমে তার প্রতিভার যে বিকাশ সাধন হয়, মানবিক শুদ্ধতায় তা আমাদের শুধু বিমুগ্ধ করে না, এই বিশ্বের কল্যাণ সাধনে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যায়। তার বিশ্বখ্যাত আত্মকাহিনী The Confession ফরাসি ভাষায় অনুবাদ করা হয়। বাংলা ভাষায় এই প্রথম অনুবাদ হলো। যিনি এই দুঃসাধ্য কাজটি করলেন তিনি হলেন বাংলাদেশের প্রথিতযশা গবেষক ও লেখক সরদার ফজলুল করিম। রাজনীতির শিক্ষা তার যথেষ্ট ছিল, রাজনীতি করেছেনও তিনি পাকিস্তানের কারাগারে তার বন্দিজীবন কেটেছে। রাজনীতি থেকে সরে এসে তিনি অধ্যয়ন ও গবেষণার কাজটি শেষপর্যন্ত বেছে নেন। পরবর্তী সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। তিনি দর্শনের ছাত্র ছিলেন, যুক্তির দৃষ্টিতে বিশ্লেষণ করতে শিখেছেন তার জীবন ও জগৎকে। তিনি নিজেকে মহামতি রুশোর ভূতগ্রস্ত হিসেবে পরিচয় দিতে খুব আনন্দ পেয়ে থাকেন। রুশোর এই আত্মকাহিনি দীর্ঘসময় ধরে তিনি পড়েছেন, উপলব্ধি করেছেন ও বিচার-বিশ্লেষণ করেছেন- তারপর বাংলা ভাষায় লিখেছেন। রুশোর ব্যক্তিজীবন প্রচন্ড রকম ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ ছিল, তারপরও তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে সত্য কথাগুলো লিখেছেন। সত্য যতই কঠিন ও নিষ্ঠুর হোক না কেন, রুশোর আত্মকাহিনি আমাদের অনেক কিছু ভাবতে সাহায্য করবে। সরদার ফজলুল করিম বড় শান্তিপ্রিয় ও ধৈর্যশীল মানুষ বলেই একান্ত আপনমনে এমন একটি প্রাণবন্ত গ্রন্থের বাংলা রূপান্তর করে পাঠক হৃদয়ে শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব হয়ে থাকবেন। আমাদের সাহিত্যাঙ্গনে এ গ্রন্থটি একটি অমর কীর্তি হয়ে উঠবে, এ প্রত্যাশা রাখছি।
আমি রুশো বলছি দি কনফেশান্স্
সরদার ফজলুল করিম

















