"ভাব-বুদ্বুদ" গ্রন্থটি ড. আহমদ শরীফের লেখা একটি ব্যতিক্রমী ডায়েরি যা ১৯৮৪ সালের অক্টোবর থেকে শুরু করে তাঁর মৃত্যুর ঠিক তিনদিন আগ পর্যন্ত সময়কালের অন্তরঙ্গ ভাবনা ও তীক্ষ্ণ বিশ্লেষণে পরিপূর্ণ।
এই রোজনামচায় উঠে এসেছে ব্যক্তিজীবনের ক্ষুদ্র খণ্ডচিত্র থেকে শুরু করে বৃহত্তর সমাজ-রাষ্ট্র ও রাজনীতির জটিল বাস্তবতা। ব্যক্তি শরীফ ও চিন্তাবিদ শরীফ—এই দুই সত্তার গভীর অনুরণন রয়েছে প্রতিটি লেখায়। যেখানে ব্যক্তিগত স্মৃতি, তীব্র সত্যবচন, সামাজিক অবক্ষয়ের সমালোচনা এবং নীতিনির্ভর দর্শনের এক অবিচল প্রকাশ ঘটেছে।
ড. আহমদ শরীফ যেভাবে সরল ভাষায় গভীর চিন্তা প্রকাশ করেছেন, তা পাঠককে ভাবায়, আলোড়িত করে। চিন্তাশীল পাঠকের জন্য এটি একটি মূল্যবান ডায়েরি যা মনন, যুক্তি ও বিবেককে শাণিত করে।
বইয়ের ফ্ল্যাপ
ভাব-বুদ্বুদ মূলত ড. আহমদ শরীফের রোজনামচা। এই রোজনামচা মূলক অক্টোবর ১৯৮৪ থেকে তাঁর মৃত্যুর তিনদিন আগ পর্যন্ত (১৯৯৯) সমাজ, রাষ্ট্র, ব্যক্তি, রাজনীতি এবং সমাজে বিশিষ্ট ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতদের নিয়ে লিপিবদ্ধ। নিছক ব্যক্তিগত বিষয় যেমন এখানে উঠে এসেছে, তেমনি উঠে এসেছে একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে সমাজের নানা সঙ্গতি-অসঙ্গতি নিয়ে বক্তব্য-স্মৃতিচারণ এবং প্রাসঙ্গিক মূল্যায়ন। বরাবরের মতো এখানেও ড. শরীফ অকপট, নির্ভীক, স্বতঃস্ফূর্ত । সত্য, মানবিকতা, জীবন-দর্শন নীতি-নৈতিকতার নানাবিধ চিন্তাসমূহ কখনও মাত্র একটি বাক্যে, কখনো একটি পরিচ্ছেদে বলেছেন। যা বলেছেন তা তীব্র, স্পষ্ট এবং উদ্দীপনামায়। এই দিনলিপির ছোট-ছোট লেখায় আসলে অনেক বড়-বড় বিষয়েরই অবতারণা হয়েছে। বড় চিন্তাকে ছোট আকারে লিখতে পারার গুণ সত্যিই দুর্লভ। এই দুর্লভ কাজটিই ড. শরীফ করেছেন বেশ সচ্ছন্দে, নিরাভরণ ভাবে। ড. শরীফের চিন্তা, দর্শন, অভিজ্ঞান যেন এক হয়ে ধরা দিয়েছে এখানে। ব্যক্তি শরীফ এবং চিন্তাবিদ শরীফকে একসাথে একই গ্রন্থে পাওয়া পাঠকের জন্য সত্যিই বিষয়টি আনন্দের।
আহমদ শরীফের ডায়েরি: ভাব-বুদ্বুদ
আহমদ শরীফ