উপমহাদেশের ইতিহাসে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নাম উচ্চারণ করা হয় শ্রদ্ধা আর সংগ্রামের চেতনায়। প্রায় ৬০ বছর ধরে তিনি লড়েছেন কৃষক-মেহনতি মানুষের পক্ষে, ক্ষমতার কেন্দ্র থেকে দূরে থেকেও থেকেছেন দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রথম সারিতে। সৈয়দ আবুল মকসুদ রচিত এই গ্রন্থে উঠে এসেছে ভাসানীর সংগ্রামী জীবনের বিস্তারিত ইতিহাস—ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, পাকিস্তানের রাজনীতি এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর অনন্য অবদান। এই বইটি শুধু একটি জীবনী নয়, বরং একটি সময়ের দলিল, একটি আদর্শিক পথচলার অনুপ্রেরণা।
বইয়ের ফ্ল্যাপ
উপমহাদেশের ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতাবিরোধী শীর্ষ স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মধ্যে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর কর্মজীবন দীর্ঘতম: প্রায় ৭৫ বছর। ১৯১৭ থেকে ১৯৭৬-এ মৃত্যু পর্যন্ত প্রায় ৬০ বছর তিনি জাতীয়তাবাদী রাজনীতির মূল স্রোতের সঙ্গে ছিলেন। তবে অন্য জাতীয়তাবাদী নেতাদের সঙ্গে তাঁর পার্থক্য এখানে যে, তিনি অবিচ্ছিন্নভাবে দরিদ্র কৃষক ও গ্রামের খেটে-খাওয়া মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য জমিদার-মহাজন প্রভৃতি শোষকশ্রেণির বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। শ্রেণিগত দিক থেকে তিনি ছিলেন গ্রামীণ মধ্যবিত্ত। শৈশবেই বাবা-মা, ভাই-বোনদের হারিয়ে, বিশেষ করে সম্পত্তি বেহাত হয়ে যাওয়ায়, তিনি ছন্নছাড়া অবস্থায় এক অনিশ্চিত জীবনের পথে চলে যান; কিন্তু অল্পদিনের মধ্যেই যৌবনের শুরুতে, তিনি খুঁজে পান পথ: দেশের স্বাধীনতা ও শোষিত নিপীড়িত মানুষের মুক্তির জন্য জীবন উৎসর্গ করবেন এবং আমৃত্যু তিনি তাই করে গেছেন।
ঔপনিবেশিক আমলে প্রধান কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মওলানা ভাসানী।
পাকিস্তানের রাজনীতিতে তাঁর সময়ে তিনি ছিলেন সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। যদিও সব সময়ই তিনি ছিলেন ক্ষমতার বাইরে। ১৯৩০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে তাঁর মৃত্যুর পূর্বপর্যন্ত দেশের এমন কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন ছিল না যার নেতৃত্ব দেননি মওলানা ভাসানী। উপমহাদেশের এই মহান নেতার বৈচিত্র্যময় ও ঘটনাবহুল দীর্ঘ জীবনের নানা দিক এখানে উঠে এসেছে। একাগ্রতা, নিষ্ঠা, নিরপেক্ষতার গবেষণালব্ধ এই গ্রন্থটি ভাসানীর খ্যাতির মতোই উজ্জ্বল ও অনন্য। এই অসাধারণ মৌলিক রাজনৈতিক জীবনচরিত গ্রন্থ হিসেবে উৎকৃষ্ট উদাহরণ নির্মাণ করেছে।
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী
সৈয়দ আবুল মকসুদ

















