হুমায়ুন আজাদ কবিতা উৎপাদন করেন না, বা লেখেন না, তিনি কবিতা সৃষ্টি করেন। এই সৃষ্টির কাজ চলে জীবন বিকাশের মতো ধীরে ধীরে। দীর্ঘ সময় পর প্রকাশিত তাঁর এই কাব্যগ্রন্থে স্থান পেলো এমন একগুচ্ছ কবিতা, যা সাম্প্রতিক কবিতার দূষণমুক্ত-নিবিড়, অন্তরঙ্গ, অমল এই কবিতারাশি, এবং এর ভাষা ভিন্ন, গভীর অনুভূতির ছোঁয়ায় যা পঙক্তিতে পঙক্তিতে আলোড়িত। হুমায়ুন আজাদের এই কবিতারাশিতে যা বড়ো হয়ে ধরা পড়েছে, তা হচ্ছে প্রাজ্ঞতা, যার বড়ো অভাব আমাদের কবিতায়। আমাদের কবিদের বয়স বাড়ে না, তাঁরা প্রাজ্ঞ হন না, থেকে যাওয়ার চেষ্টা করেন উত্তেজিত যৌবনে; কিন্তু হুমায়ুন আজাদ আর সংকীর্ণ নগরে বন্দি হয়ে নেই, বেরিয়ে পড়েছেন পল্লির অম্লান সৌন্দর্যের মধ্যে, সেই শোভা থরেথরে ফুটে উঠেছে, এবং প্রেমের কোমলতা বেদনা হাহাকার ছড়িয়ে আছে কবিতার পর কবিতায়। একগুচ্ছ কবিতায় আন্তরিক প্রকাশ ঘটেছে ব্যক্তিগত মৃত্যুবোধ ও চরম যন্ত্রণার, যার তুলনা মেলে না চারপাশে। গভীরভাবে আধুনিক এই কবিতারাশি কবিতার শাশ্বত সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ, যা পাওয়া যায় শুধু প্রধান কবিদের কবিতায়।
কাফনে মোড়া অশ্রুবিন্দু
হুমায়ুন আজাদ