📚 জাতির আত্মদহন ও কবির আর্তনাদ – ‘উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ’
শামসুর রাহমানের এই কাব্যগ্রন্থে উঠে এসেছে স্বাধীনতার স্বপ্নভঙ্গ, মধ্যবিত্তের যন্ত্রণা, ভূমিহীন মানুষের হাহাকার এবং জাতিসংঘের নিস্পৃহতা। ব্যক্তিগত বেদনা ও জাতীয় দুর্দশা একাকার হয়ে ধরা দেয় প্রতিটি পঙক্তিতে।এই বইটি উপযুক্ত প্রতীকী কাব্য, রাজনৈতিক ও প্রতিবাদী কবিতার পাঠকদের জন্য।
বইয়ের ফ্ল্যাপ
নামেই বোঝা যায় এ কাব্যগ্রন্থের কেন্দ্রে রয়েছে নানা চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া তৎকালীন বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালে যে দেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে, সে দেশের এমন করুণ পরিণতি কবিকে প্রতি মুহূর্তেই পীড়িত করেছে। এ কাব্যগ্রন্থে ঠাঁই পাওয়া চন্দ্রনাথ বণিক আসলে শামসুর রাহমানেরই নামান্তর, আর চম্পকনগর রূপকের আড়ালে রয়েছে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের রাজধানী ঢাকা, যে শহরে কবির জন্ম, বেড়ে ওঠা, জীবন-জীবিকা সবকিছু। মনসার মুহুর্মুহু আঘাতে জর্জরিত হওয়া চাঁদ সদাগর কবি নিজেই।
শুধু দেশ নয়, পরিবার, সমাজ ও পৃথিবী নিয়ে কবির ভাবনাও ফুটে উঠেছে এখানকার নানা কবিতায়। আরও আছে মধ্যবিত্তের দুর্দশার বর্ণনা, আছে ভূমিহীন কৃষকের যাতনা। নখদন্তহীন সুবিশাল হাতির মতো দাঁড়িয়ে থাকা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান জাতিসংঘ নিয়েও লিখেছেন কবিতা: ‘জাতিসংঘ পরিণামহীন দেবতার মতো ডানা/ ঝাপটায় শূন্যতায়। জাতিসংঘের ফটক বন্ধ/ হলেও তৃতীয় বিশ্বে নবজাতকের নতুন চিৎকার বেজে/ উঠবে নিয়ত, শীর্ণ হাত প্রসারিত হবে ক্রমে/ সভ্যতার দিকে।’
উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ
শামসুর রাহমান